ইফতারে ‘পচা বেগুনি’ পরিবেশনকে কেন্দ্র করে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাককানইবি) শিক্ষার্থী ও স্থানীয় এলাকাবাসীর মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
রবিবার,১৭ মার্চ রাত ১১টায় সংঘর্ষ শুরু হয়ে মধ্যরাত পর্যন্ত চলে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় গেট সংলগ্ন ‘হোটেল সারেং’ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের এক শিক্ষার্থীকে পচা বেগুনি পরিবেশন করা হয়। এরপর বেগুনিটির মান ভালো নয়- এমন অভিযোগ জানাতে গেলে হোটেল মালিকের সাথে শিক্ষার্থীদের কথা কাটাকাটি হয় । পরে এ ঘটনা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও ত্রিশালের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানানো হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি বিষয়টি মীমাংসার জন্য যান। এক পর্যায়ে প্রক্টরের উপস্থিতিতেই শিক্ষার্থীরা দুজন হোটেল কর্মচারীকে মারধর করে । তৎক্ষণাৎ আশেপাশের দোকানদার এবং স্থানীয় এলাকাবাসী ও উৎসুক জনতা সেখানে ভিড় করলে শিক্ষার্থীরা লাঠিসোঠা ও রড নিয়ে দফায় দফায় সারেং হোটেলে আক্রমণ চালায় । হোটেলের থাই গ্লাস ও আসবাবপত্র ভাঙচুর করে শিক্ষার্থীরা। এসময় এলাকাবাসী প্রতিরোধ করতে গেলে সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে । উদ্ভূত সমস্যা নিরসনে তৎক্ষণাৎ আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন করা হয় । পরে রাত ১টায় ত্রিশাল থানা থেকে পুলিশের অতিরিক্ত ফোর্স মোতায়েন করা হলে শিক্ষার্থীরা পিছু হটে ।
সংঘর্ষের একপর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গমাতা হলের রাস্তার পাশের রুমগুলোতে পাথর ছুড়ে মারে এলাকাবাসীরা। এতে কয়েকটি কক্ষের জানালার কাঁচ ভেঙে গেছে। এ ছাড়াও ২নং গেট ও বটতলা সংলগ্ন মেসগুলোতেও হামলা চালায় এলাকাবাসীরা। এরপর আরও উত্তেজিত হয়ে শিক্ষার্থীরা হামলা চালায় ও কয়েক দফা সারেং হোটেল ভাঙচুর করে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সঞ্জয় কুমার মুখার্জি বলেন, ২ নং গেইট সংলঘ্ন এলাকায় এখনো থমথমে উত্তেজনা বিরাজ করছে । বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও স্থানীয় পুলিশ সবাই একত্রিত হয়ে বিষয়টি সমাধানের জন্য কাজ করে যাচ্ছে । যেকোনো সময় আবারও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটতে পারে, আমরা সতর্কভাবে সবকিছু নিয়ন্ত্রণে আনতে কাজ করে যাচ্ছি ।
এ বিষয়ে ত্রিশাল উপজেলার ইউএনও জানান, হোটেলের খাবারের মানের বিষয়টি দেখার দায়িত্ব আমার। এসব বিষয় নিয়ে আমরা যেন আইন নিজের হাতে তুলে না নেই। পরবর্তীতে আমাদের মনিটরিং থাকবে। এমন কোন বিষয় ঘটলে আমাদের জানালে সাথে সাথে পদক্ষেপ গ্রহণ করব। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা হয়েছে, কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটবে বলে মনে করছি না । তবুও পুলিশের টহল বাহিনী সেখানে অবস্থান করবে ।
সার্কেল এএসপি (ত্রিশাল) অরিত সরকার বলেন, খাবারের মান নিয়ে সংঘাতের সৃষ্টি হয়েছিল। এখন সবকিছু স্বাভাবিক রয়েছে।
Leave a Reply