
ময়মনসিংহের নান্দাইলে মহাসড়কের পাশে পৌরসভার বর্জ্য ফেলায় তা ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। ফলে স্বাস্থ্য নিরাপত্তার ঝুঁকিতে রয়েছে মহাসড়কে যাতায়াত করা হাজার হাজার যানবাহন চালক, যাত্রী ও পথচারীরা। প্রতিদিনই নান্দাইল পৌরসভার বর্জ্য ফেলা হচ্ছে উপজেলার চন্ডিপাশা ইউনিয়নের ডাংরী নামক স্থানে মহাসড়কের পাশে।
জানা গেছে, ১৯৯৭ সনে স্থাপিত নান্দাইল পৌরসভাটি প্রথম শ্রেণির পৌরসভা হলেও তা যেন কাগজে পত্রেই সীমাবদ্ধ, কিন্তু বাস্তবে তা একেবারেই ভিন্ন। পৌরসভার বর্জ্য ফেলার জন্য সুনির্দিষ্ট কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তাই নিত্যদিনের বর্জ্য প্রথমে ফেলা হতো নান্দাইল উপজেলা সদরের নরসুন্দা ব্রিজের গোড়ায়। পরবর্তীতে তা নান্দাইল মডেল থানার সামনে ময়লা ফেলায় জনদূর্ভোগ ছিল চরমে।
এরপর থেকে নরসুন্দা নদী রক্ষা ও উপজেলার পরিবেশ রক্ষায় প্রায় চার কিলোমিটার দূরে ময়মনসিংহ টু কিশোরগঞ্জ মহাসড়কের ডাংরী নামক স্থানে সড়ক ও জনপথের সরকারি পরিত্যক্ত জায়গায় ওই বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। সেখানে মহাসড়কের দক্ষিণ পাশে ফেলা হচ্ছে পৌরসভার নিত্যদিনের বর্জ্য। তাও পরিবেশ সুরক্ষার কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করেই অথবা বড় ধরনের কোন ডাস্টবিন তৈরী না করেই। এলোপাথারীভাবে রাস্তার পাশে ময়লা ফেলা হচ্ছে। এতে করে দক্ষিণা বাতাসে সেমস্ত ময়লার দূর্গন্ধ ছড়িয়ে যাচ্ছে মহাসড়ক দিয়ে চলাচলকারী হাজার হাজার মানুষের নাকে-মুখে। এতে বায়ূ দূষিত হচ্ছে। নাক-মুখ চেপে ধরে শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থায় থাকতে হয় প্রায় ২/৩ মিনিট। এতে করে শিশু-কিশোর, যুবক, বৃদ্ধসহ সব বয়সের মানুষের দম গেলো গেলো অবস্থা। এছাড়া ওই পচা বর্জ্যের স্তুপ থেকে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে আশপাশের এলাকায়। দুর্গন্ধের এমন অবস্থা চলতে থাকলে বিভিন্ন ধরনের রোগে আক্রান্ত হয়ে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়বে সাধারণ মানুষ। তাই এ থেকে পরিত্রাণ চান সাধারণ মানুষ। গাড়ির হেডলাইটের আলো বর্জ্যের স্তূপে পড়লে তা রাতেরবেলায় অদ্ভুতভাবে প্রতিফলিত হয়, এতে যানবাহন চালানো আরো ঝুঁকিপূর্ণ হচ্ছে বলে অনেকেই মন্তব্য করেন। শুধু তাই নয়, প্রতিবার বৃষ্টির পর বর্জ্য থেকে নির্গত তরল পদার্থ মাটির নিচে ও ড্রেনে মিশে যাচ্ছে, যা পানি দুষণের আশঙ্কা বাড়াচ্ছে। এ ব্যাপারে নান্দাইল পৌরসভা কর্তৃপক্ষের উদাসীনতাকে দায়ি করছেন অনেকে।
স্থানীয় সিএনজি চালক শাহআলম ও ইজিবাইক চালক রাসেলসহ আরও অনেকে বলেন, পৌরসভার গাড়িগুলো প্রতিদিনই বর্জ্য ফেলে চলে যায়। এমনটা চলছে এক বছর ধরে। কিন্তু কেউ কোন ব্যবস্থা নেয়নি। এ রাস্তায় যাতায়াত করা কষ্টকর হয়ে উঠেছে। রাস্তার উত্তর পাশেও সরকারি জায়গা রয়েছে, যদি উত্তর পাশে ময়লা ফেলা হতো তাহলেও পথচারীরা কিছুটা হলেও দুর্গন্ধ থেকে বাঁতো।
এ বিষয়ে পৌর প্রশাসক ও নান্দাইল উপজেলা নির্বাহী অফিসার সারমিনা সাত্তার বলেন, পৌরসভার নির্দিষ্ট ময়লার ভাগাড় না থাকায় সড়ক ও জনপথের সরকারি জায়গা ময়লা ফেলা হচ্ছে। তবে ময়লার দুর্গন্ধ যাতে না ছড়ায় সেজন্য সেখানে খুব দ্রুতই টিনের বেড়া দিয়ে পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষার ব্যবস্থা করা হবে।
Leave a Reply