
কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রামে চুরি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা উদ্বেগজনক হারে ক্রমশ বেড়ে যাচ্ছে।
বুধবার, ১ অক্টোবর উপজেলার সড়কের পাশে আকাশ টেলিকম থেকে লক্ষাধিক টাকার মালামাল চুরি হয়। এর আগে গত (২৫ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় ব্যবসায়ী প্রদীপকে চোখে মরিচের গুঁড়ো নিক্ষেপ করে প্রায় ৮ লাখ টাকার স্বর্ণালংকার ছিনতাই করে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। এসব ঘটনায় সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।
বিশেষ করে উপজেলা সদর ইউনিয়ন, জিরো পয়েন্ট ও বিভিন্ন হাটবাজার এলাকায় সন্ধ্যার পর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চুরি ও ছিনতাইকারীরা সক্রিয় হয়ে ওঠে। এতে সাধারণ মানুষের মধ্যে ভীতি তৈরি হয়েছে এবং ব্যবসায়ীদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, বাজার থেকে বাড়ি ফেরার সময় কিংবা একান্ত প্রয়োজনে রাতে বাইরে বের হলে চোর ও ছিনতাইকারীরা টার্গেট করছে। মোবাইল ফোন, টাকা-পয়সা, স্বর্ণালংকার থেকে শুরু করে মোটরসাইকেল পর্যন্ত লুটের ঘটনা নিয়মিত ঘটছে। ভুক্তভোগীদের কেউ কেউ সামাজিকভাবে বিষয়টি মীমাংসা করলেও, অনেকে ভয়ে থানায় অভিযোগ করতে সাহস পান না। এতে করে অপরাধীরা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠছে।
সদর ইউনিয়নের প্রতিটি ওয়ার্ডে চুরি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে। সচেতন মহলের ধারণা, মাদক ও ইয়াবা সেবনকারীরা এসব অপরাধের সঙ্গে জড়িত। তারা আরও জানান, মাদকসেবীরা প্রায় প্রতিটি গ্রামে প্রভাব বিস্তার করে রেখেছে। শুধু সদর ইউনিয়ন নয় উপজেলার কাস্তুল, দেওঘর, বাঙালপাড়া, পূর্ব অষ্টগ্রাম, কলমা, আদমপুর ও আবদুল্লাহপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকাতেও একই প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। ফলে বাজার-হাট থেকে শুরু করে গ্রামীণ জনপদ পর্যন্ত অরক্ষিত হয়ে পড়েছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী টহল দিলেও তা যথেষ্ট নয়। অপরাধীরা ধরা পড়লেও অল্প সময়ের মধ্যেই জামিনে বের হয়ে আবারও একই কাজে জড়িয়ে পড়ে। এতে প্রতিরোধমূলক উদ্যোগগুলো কার্যকর হচ্ছে না।
ব্যবসায়ী নেতাদের মতে, প্রতিদিন হাট-বাজারে লেনদেনের কারণে ব্যবসায়ীরা ছিনতাইকারীদের প্রধান লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হচ্ছেন। এতে ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তাহীনতা তৈরি হচ্ছে এবং স্থানীয় অর্থনীতিও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
অষ্টগ্রাম সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সৈয়দ ফাইয়াজ হাছান বাবু বলেন, “চুরি ও ছিনতাই প্রতিরোধে স্থানীয় প্রশাসনের পাশাপাশি জনগণকেও এগিয়ে আসতে হবে। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে আমরা নিয়মিতভাবে পাহারার ব্যবস্থার উদ্যোগ নিচ্ছি। তবে মাদক ও অপরাধ নিয়ন্ত্রণে পুলিশি টহল জোরদার করা এবং অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া এখন সময়ের দাবি।”
সচেতন মহল মনে করেন, রাত্রীকালীন পাহারা চালু করা, নিয়মিত পুলিশ টহল এবং স্থানীয়দের সক্রিয় প্রতিরোধের মাধ্যমে চুরি ও ছিনতাই নিয়ন্ত্রণ সম্ভব।
Leave a Reply