মোখলেছকে জবাই করে পেট ফুটো করে বস্তা বেঁধে নদীতে ফেলেছি- এমনই স্বীকারোক্তি দিলেন মোখলেছ হত্যায় গ্রেফতার মিজান মিয়া।
মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল মিজানকে বিজ্ঞ আদালতে হাজির করলে বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্র্যাট মো: আশিকুর রহমানের কাছে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন তিনি।
এর আগে সোমবার, ২২ এপ্রিল দুপুর দেড়টার দিকে মিজানকে হবিগঞ্জ জেলার শায়েস্তাগঞ্জ থানা এলাকা থেকে কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানা পুলিশ ও জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)’র যৌথ অভিযানে গ্রেফতার করা হয়৷
পুলিশ জানায়, ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজের সূত্র ধরে এ ঘটনায় অভিযুক্ত মিজান মিয়াকে আটক করা হয়।
গ্রেফতারের পর পুলিশকে দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে মোখলেছের মরদেহ উদ্ধারে নরসুন্দা নদীতে দুই দফা উদ্ধার অভিযান চালায় পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল। প্রথম দিন মরদেহের সন্ধান না মিললেও মঙ্গলবার বিকেলে জেলা শহরের গুরুদয়াল সরকারি কলেজ সংলগ্ন ওয়াচটাওয়ার এলাকায় নরসুন্দা নদী থেকে হত্যাকাণ্ডের পর নদীতে ফেলে দেয়া মিঠামইন উপজেলার কেওয়ারজোড় ইউনিয়ন ছাত্রলীগ নেতা মোখলেস উদ্দিন ভূইয়া (২৮)’র মাথাবিহীন লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
মরদেহ উদ্ধারের আগে ঘটনাস্থল থেকে নিহতের ব্যবহৃত লুঙ্গি, ভাড়া বাসার চাবি ও হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরি উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ জানায় নিহত মোখলেস উদ্দিন গত ২৯ মার্চ জেলা শহরের পাগলা মসজিদে তারাবির নামাজ পড়ে বাসায় ফেরার পথে নিখোঁজ হন। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তার কোন সন্ধান না পেয়ে গত ৩১ মার্চ কিশোরগঞ্জ মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন তাঁর বড় ভাই মিজানুর রহমান। পরে ১৬ এপ্রিল এ ঘটনায় অজ্ঞাত ৫ জনকে আসামি করে একটি অপহরণ মামলা দায়ের করেন তিনি।
পরে কিশোরগঞ্জ মডেল থানা পুলিশ ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একটি যৌথ আভিযানিক দল সিসিটিভির ফুটেজের সূত্র ধরে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় মিজানকে হবিগঞ্জ জেলার শয়েস্তাগঞ্জ থেকে মিয়ান মিয়াকে গ্রেফতার করে।
কিশোরগঞ্জ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা জানান,‘মিজানের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী আমরা সোমবার থেকে নরসুন্দা নদীতে উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করি।মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে নরসুন্দা নদী থেকে ভাসমান অবস্থায় নিহতের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে আটক মিজান।’
কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহা. রাসেল শেখ জানান, মোখলেছকে জবাই করে হত্যার পর লাশ পানিতে ফেলে দেওয়া হয়। তার আগে লাশ পানিতে যেন না ভেসে যায় সেই জন্য তার পেট ফুটো করা হয় এবং বস্তায় ভরে বস্তার সঙ্গে ব্লক বেঁধে ফেলা হয়। এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তির আওতায় আনা হবে বলে আশ্বস্ত করেন তিনি।
Leave a Reply