ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার আচারগাঁও ফাজিল (ডিগ্রী) মাদ্রাসার শিক্ষিকা নাজমা খাতুন দীর্ঘ ১৩ মাস বিদেশে থাকার পরেও হাজিরা খাতায় নিয়মিত স্বাক্ষর দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রথমে অসুস্থতার ছুটি নিয়ে তিনি বিদেশ যান। পরে মাতৃত্বজনিত ছুটি নিয়ে মোট ১৩ মাস বিদেশে কাটিয়ে আসেন। সেখান থেকে টেস্টউিব বাচ্চা নিয়ে দেশ ফিরেন শিক্ষিকা নাজমা খাতুন। এমনকি বিলের স্বাক্ষর খাতায় স্বাক্ষর করে নিয়মিত বেতন ভাতাদি উত্তোলন করারও গুরুতর অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। তবে শিক্ষিকার দাবি তিনি ছুটিতে যাননি, তাই যথা নিয়মে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করেছেন।
জানা গেছে, শিক্ষিকা নাজমা খাতুনের বাড়ি নান্দাইল উপজেলার শেরপুর গ্রামে। তিনি নান্দাইল উপজেলা পৌর সদরে অবস্থিত আচারগাঁও ফাজিল (ডিগ্রী) মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করেন। শিক্ষিকা নাজমা খাতুন গত ২০২২ এর ১ ফেব্রুয়ারী অসুস্থতা জনিত কারণে ২ সপ্তাহের জন্য ছুটি নেন। ছুটি নিয়ে তিনি ভারতে চলে যান। সেখানে থাকাবস্থায় একই সনের সেপ্টেম্বর মাস থেকে তিনি মাতৃত্বজনিত ছুটিতে যান। এভাবে দীর্ঘ ১৩ মাস ভারতে অবস্থানের পর গত ২০২৩ এর ফেব্রুয়ারি মাসে দেশে ফিরে কাজে যোগদান করেন। ছুটিতে থাকাবস্থায় হাজিরা খাতায় ওই শিক্ষিকার স্বাক্ষরের ঘর যথারীতি খালি থাকে (যার ৬ মাসের ফটোকপি এ প্রতিবেদকের হাতে রয়েছে)। শুধু তাই নয় প্রতি মাসে মাদ্রাসা কর্তৃক দাখিল করা বেতন ভাতাদির বিলেও শিক্ষিকার স্বাক্ষর দিতে দেখা গেছে। তবে একটির সাথে অন্য মাসের স্বাক্ষরের মিল নেই। অভিযোগ রয়েছে নাজমাকে অনৈতিক সুবিধা দিয়ে তার বেতন ভাতাদি তুলে নিয়েছে অন্যকেউ। তিনি তো সন্তান সম্ভবা ছিলেন না তাহলে ডাক্তারি সনদ ছাড়া ছুটি পেলেন কি করে? এছাড়া, মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আব্দুল হাই তাঁর বিরুদ্ধে রয়েছে কমযোগ্যতাসহ নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ।
যা তদন্ত প্রতিবেদন শেষে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়ায় রয়েছে। এদিকে নাজমা খাতুন জানান, তিনি কোন প্রকার ছুটি নেননি বা কোন দেশেও যাননি। যেহেতু ছুটি নেননি তাই হাজিরা খাতায় নিয়মিত স্বাক্ষর করেছেন। পরবর্তীতে এ প্রতিনিধির সাথে দেখা করে তাঁর ছুটির বিষয় নিয়ে পত্রিকায় কোন সংবাদ না লিখার অনুরোধ করেন।
এ বিষয়ে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আব্দুল হাই বলেন, তিনি (নাজমা) ছুটি নিয়েছিলেন। তবে ব্যস্ত আছেন, মিটিংয়ে আছেন বলে ফোনকল কেটে দেন। নান্দাইল উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার রফিকুল ইসলাম ভূইয়া জানান, ছুটি নিতেই পারেন কিন্তু খাতায় স্বাক্ষর করবেন কেন? বিষয়টি সম্পর্কে তিনি অবগত নন। খোঁজ নিয়ে সত্যতা পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেবেন। আচারগাঁও ফাজিল মাদ্রাসার গর্ভনিং বডির বর্তমান সভাপতি ও ময়মনসিংহের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) লুৎফুন্নাহারের কাছে নাজমা খাতুনসহ অন্যান্য অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি আমার মনে পড়ছেনা, অভিযোগকারীকে বলবেন তিনি যেন আমার সাথে যোগাযোগ করেন।
Leave a Reply