
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের জগন্নাথপুর এলাকায় কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় অটোরিকশার পাঁচ জন নিহতের ঘটনায় দায়ের করা মামলার প্রধান আসামি কাভার্ডভ্যান চালক অনিক হোসেন (৩২) কে গ্রেফতার করেছে ভৈরব হাইওয়ে থানা পুলিশ।
গত মঙ্গলবার, ১৭ ডিসেম্বর গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী থানার কলসি ফুকরা এলাকার নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। অনিক হোসেন ওই এলাকার সুলতান আহমেদ এর ছেলে।
বুধবার ১৮ ডিসেম্বর ভৈরব হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. সাজু মিয়া বিডিচ্যানেল ফোরকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
গত সোমবার, ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসের দিন সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সংঘটিত দুর্ঘটনার পর কাভার্ডভ্যানের চালক অনিক হোসেনসহ দুই চালক পালিয়ে যায়।
ঘটনার পর ‘সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত অটোরিকশাচালক শাহিন আলমের পিতা পরশ আলী বাদি হয়ে ভৈরব থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পরপরই হাইওয়ে থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে প্রধান আসামি কাভার্ডভ্যান চালক অনিক হোসেনকে গ্রেফতার করে ১৮ ডিসেম্বর বুধবার আদালতে প্রেরণ করে ।
উল্লেখ্য, গত সোমবার, ১৬ ডিসেম্বর সকালে নরসিংদীর নিলকুঠি থেকে দুটি কাভার্ডভ্যান ভৈরবের উদ্দেশ্যে আসছিল। এসময় যাত্রীসহ একটি অটোরিকশা ভৈরবের দিকে যাচ্ছিল। কাভার্ডভ্যান দুটি যখন ভৈরবের জগন্নাথপুর ব্রিজ পার হয়, তখন অটোরিকশাটি ওভারটেক করতে গিয়ে দেখে বিপরীত দিক থেকে আরেকটি গাড়ি আসছে। তখন অটোরিকশা দুই কাভার্ডভ্যানের মাঝখানে পড়ে সামনের ভ্যানকে ধাক্কা দেয়। এরপর পেছনে থাকা অপর ভ্যানটি অটোরিকশাকে ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই অটোরিকশায় থাকা দুই পুরুষ ও তিন নারীর মৃত্যু হয়।
নিহতরা হলেন, কিশোরগঞ্জ জেলার কুলিয়ারচর উপজেলার রামদী ইউনিয়নের জগৎচর গ্রামের দুদু মিয়ার মেয়ে সহুরা খাতুন (৬২) ও হালিমা খাতুন (৬০), তারা সম্পর্কে আপন দুই বোন। অন্যজন তাদেরই আত্মীয় একই গ্রামের আব্দুর রহিমের স্ত্রী শাহানা (৬০)। তিনি নিহত দুই বোনের সহযাত্রী ছিলেন। এ ঘটনায় নিহত অন্য দুইজন নরসিংদী জেলার রায়পুরা উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের পিরিজকান্দি গ্রামে পরশ আলীর ছেলে সিএনজি চালক শাহিন আলম (২৩) এবং আব্দুল রাজ্জাকের পুত্র রাজন মিয়া (১৭)।
এসময় কাভার্ডভ্যানের দুই চালক পালিয়ে গেলেও কাভার্ডভ্যান দুটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
পরে ওইদিন রাতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই নিহতদের মরদেহ পরিবারের সদস্যদের নিকট বুঝিয়ে দেয় পুলিশ। এ তথ্য নিশ্চিত করেন ভৈরব হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ মো. সাঝু মিঞা।
নিহত অটোরিকশাচালক শাহীন আলমের বাবা পরশ মিয়া সাংবাদিকদের বলেন, ৫ বছর আগেও আমি আমার এক ছেলেকে সড়ক দুর্ঘটনায় হারিয়েছি। এবার আমার আরেক ছেলেকে হারালাম। নিষ্ঠুর সড়ক এ নিয়ে আমার দুই সন্তানকে কেড়ে নিয়েছে। আমি কভার্ড ভ্যান চালকদের বিচার চাই।
এ বিষয়ে নিহত রাজনের বাবা আব্দুর রাজ্জাক সাংবাদিকদের বলেন, বাজার করতে আমার ছেলে ভৈরবে যাচ্ছিল। সকালে নাস্তা খেয়ে আমার সাথে কথা বলে বাড়ি থেকে বের হওয়ার কিছুক্ষণ পর ফোন আসে আমার ছেলে এক্সিডেন্ট করেছে। আমার একমাত্র ছেলেকে হারালাম। আমি এখন কীভাবে চলবো?
Leave a Reply