ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার মোয়াজ্জেমপুর ইউনিয়নে ভিজিএফ এর চাল বিতরণে হরিলুটের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
শনিবার (১৫ জুন) খাদ্য ও দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের আওতায় অসহায়, দুস্থ, গরীব ও ছিন্নমুল মানুষের জন্য প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার ভ্যালনারেবল গ্রুপ ফিডিং (ভিজিএফ) এর বিনামুল্যে চাল বিতরণে পরিমাণে কম দেয়াসহ নানাবিধ অনিয়ম পরিলক্ষিত হয়েছে। সরেজমিন পরিদর্শনে জানারগেছে, মোয়াজ্জেমপুর ইউনিয়নে ২ হাজার ৭২৫ জন উপকারভোগীর মাঝে বিনামূল্যে জনপ্রতি ১০ কেজি করে ভিজিএফ চাল বরাদ্দ রয়েছে। ওই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তাছলিমা আক্তার শিউলী, ইউপি সচিব ইলিয়াছ মওদুদী ও মাহফুজুর রহমান নামে একজন সরকারি কর্মচারী ট্যাগ অফিসার হিসাবে উক্ত ভিজিএফ বিতরণে দায়িত্ব পালন করেছেন। ভিজিএফ বিতরণকালে একই যুবক ও শিশুকে একাধিকবার ৪/৫টি করে ভিজিএফ কার্ড নিয়ে ভিজিএফ চাল উত্তোলন করতে দেখা গেছে। এছাড়াও প্রতি কার্ডে ২ থেকে আড়াই কেজি করে চাল ওজনে কম দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এক পরিবারে একাধিক ভিজিএফ কার্ড প্রাপ্ত হয়েছে। মোয়াজ্জেপুর ইউয়িনের মোয়াজ্জেমপুর ও কালেঙ্গা গ্রামের বেশ কিছু শিশু ও যুবক ১০ টাকার বিনিময়ে চাল ব্যাপারী সাইফুর ওরফে সাইদুরের হাতে থাকা শতাধিক কার্ডের চাল তুলে দিচ্ছেন- এমন চিত্র দেখা গেছে। মোয়াজ্জেমপুর গ্রামের কালামের পুত্র সুমন (১৩), কালেঙ্গা গ্রামের গিয়াস উদ্দিনের পুত্র নাসির (১৮) ও রিয়াদ (২২) নামে আরেক যুবককে জিজ্ঞাসা করলে তারা জানায় যে, কার্ড প্রতি ১০ টাকার বিনিময়ে বেপারী সাইকুল ওরফে সাইদুর এর পক্ষে তারা চাল তুলে দিচ্ছেন। তবে কার্ড কোথায় পেয়েছেন এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে সেই কার্ড ওই বেপারীই দিয়েছেন বলে জানায় তারা। পরে ওই ব্যাপারীর খোজঁ করতে গেলে তিনি চালের বস্তা ফেলে রেখে তাৎক্ষনিক পালিয়ে যান। ফলে তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। মোয়াজ্জেমপুর গ্রামের মেম্বার মোস্তফা কামাল বলেন, আমি ৯৫টি কার্ড পেয়ে তা জনগণকে বিলিয়ে দিয়েছি এর বেশি কিছু বলতে পারবো না। অপরদিকে কালেঙ্গা গ্রামের আব্দুল গণি জানান, আমি মেম্বার হিসাবে ৯৫টি কার্ড ও দলের হয়ে ৫০টি কার্ড যথাযথভাবে বিলি করেছি, কিন্তু কে কি করছে তা আমার জানা নেই। ইউপি চেয়ারম্যানের নিজ কক্ষের ভিতরে ভিজিএফ এর চালের বস্তা গুদামজাত করতে দেখা যাওয়ার বিষয়ে জিজ্ঞাস করলে তিনি বলেন, এখানে ১০টি চালের বস্তা আলাদা রাখা হয়েছে। এগুলো পরে বিতরণ করা হবে।
এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান তাছলিমা আক্তার শিউলীর সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি বলেন এগুলো আমার দেখার বিষয় নয়। আমি কার্ড দেখে মাল দিয়েছি। নান্দাইল উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আহসান উল্লাহ বলেন, আমি স্টেশনে নাই, এরপরেও কি হয়েছে জানার চেষ্টা করছি।
নান্দাইল উপজেলা নির্বাহী অফিসার অরুণ কৃষ্ণ পাল বলেন, বিষয়টি আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি।
Leave a Reply