কিশোরগঞ্জের মিঠামইনের চাঞ্চল্যকর কৃষক হেলিম হত্যা মামলার ১২ আসামিকে গাজীপুর জেলা থেকে র্যাব-১ এর সহযোগিতায় গ্রেফতার করেছে র্যাব-১৪, সিপিসি-২ কিশোরগঞ্জ ক্যাম্পের একটি আভিযানিক দল।
গ্রেফতার ১২ আসামির মধ্যে আমিন মিয়া(৩৬) মিঠামইন উপজেলার ঘাগড়া এলাকার মামুদ নবীর ছেলে, শামিম মিয়া (৩৪) মাহমুদ নবীর ছেলে, তাজিম মিয়া (২৫) মাহমুদ নবীর ছেলে, কবির মিয়া (৫৮) দুঃখিত মিয়ার ছেলে, শাহাবুদ্দিন (৩৭) কবির মিয়ার ছেলে, কোকিল মিয়া (৩২) কবির মিয়ার ছেলে, শফিক মিয়া (৫০) মৃত জহুর মিয়ার ছেলে, রিয়াজ মিয়া (২২) শফিক মিয়ার ছেলে, হামিদুল মিয়া (৪০) মৃত আলী মাহমুদের ছেলে, শেপুল মিয়া(২৫) মৃত রউফ মিয়ার ছেলে, তামিম মিয়া(২২) মৃত রউফ মিয়ার ছেলে ও ইন্তাজ মিয়া(২২) শফিকুল ইসলামের ছেলে। এরা সবাই মিঠামইন উপজেলা ঘাগড়া গ্রামের বাসিন্দা।
মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল রাত দেড়টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে গাজীপুর জেলার পোড়াবাড়ি বাজার এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।
এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিডিচ্যানেল ফোরকে বিষয়টি জানান, র্যাব-১৪, সিপিসি-২ কিশোরগঞ্জ ক্যাম্পের কোম্পানী অধিনায়ক স্কোয়াড্রন লিডার মো. আশরাফুল কবির।
মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ১৩ এপ্রিল দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ভিকটিম মিঠামইন উপজেলার ঘাগড়া গ্রামের মৃত আবদুল মালেকের ছেলে কৃষক হেলিম মিয়া (৫০) ঘাগড়া হাওড়ে নিজ জমি দেখার উদ্দেশ্যে ঘটনাস্থল কিশোরগঞ্জ জেলার মিঠামইন থানাধীন ঘাগড়া সাকিনস্থ আ. রশিদের বাড়ীর সামনে পৌঁছা মাত্রই আসামি শাহজাহান মিয়া , শেরজান, মামুদ নবী, আলামিন মিয়া , শামিম মিয়া , তাজিম মিয়া , কবির মিয়া , শাহবুদ্দিন, কোকিল মিয়া , শফিক মিয়া, রিয়াজ মিয়া, হামিদুল, সেফুল মিয়া, তামিম মিয়া ও ইন্তাজ মিয়াসহ সকল আসামিগণ পূর্বপরিকল্পিতভাবে রাম দা, বল্লম, শাবল,লোহার রড ইত্যাদি দেশীয় অস্ত্র সস্ত্র নিয়ে একই উদ্দেশ্যে বে-আইনী জনতাবদ্ধে ভিকটিমের পথরোধ করে ভিকটিমকে খুন করার উদ্দেশ্যে শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারাত্মক আঘাত করে রক্তাক্ত জখম করে। ঐ সময় আশপাশের লোকজন ভিকটিমকে উদ্ধারের জন্য আগিয়ে এলে আসামিগণ তাদেরকেও মারধর করে রক্তাক্ত জখম করে। অতঃপর আসামিগণ ভিকটিমকে প্রায় মৃত অবস্থায় ঘটনাস্থলে ফেলে চলে যায়। পরবর্তীতে ভিকটিমের পরিবারের অন্যান্য লোকজন ভিকটিম ও জখমী সাক্ষী ডালিম, সুমন, সুজন, সোহেলদেরকে উদ্ধার করে মিঠামইন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায়। ভিকটিম আ. হেলিম এর অবস্থার অবনতি হলে ডাক্তার প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ভিকটিমকে পঙ্গু হাসপাতাল ঢাকাতে রেফার করে। পরে গত ১৪ এপ্রিল সকাল পৌনে দশটার দিকে ভিকটিম ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।
এই ঘটনায় ভিকটিমের ছেলে মো. ইমন বাদী হয়ে কিশোরগঞ্জ জেলার মিঠামইন থানায় ১টি হত্যা মামলা দায়ের করেন। বর্ণিত বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ায় প্রচারিত হলে দেশব্যাপী ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয় এবং আসামিগণ গ্রেফতার এড়াতে ঘটনার পর পরই এলাকা ছেড়ে বিভিন্ন জায়গায় আত্মগোপনে চলে যান। আসামিগণকে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে র্যাব-১৪, সিপিসি-২, কিশোরগঞ্জ ক্যাম্প গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে। র্যাবের গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে আসামিদে অবস্থান জানার চেষ্টা করে এবং সর্বশেষ গাজীপুর থেকে মামলার ১২জন আসামিকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
গ্রেফতার আসামিদেরকে মিঠামইন থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেফতারে র্যাব সক্রিয় রয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
Leave a Reply