
ময়মনসিংহের নান্দাইলে এস.আর.বি ব্রিকস নামের একটি ইটভাটায় মালিকের নিকট জিম্মি থাকা ২০ জন শ্রমিককে উদ্ধার করেছে যৌথবাহিনী। সেই সাথে এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে আটক করা হয়েছে ইটভাটার মালিক পক্ষের দুই ব্যক্তিকে।
বুধবার, ২ এপ্রিল সন্ধ্যায় চন্ডিপাশা ইউনিয়নের বারুইগ্রাম ডাংরি নামকস্থানে ইটভাটায় অভিযান চালিয়ে শ্রমিকদেরকে উদ্ধারসহ বিল্লাল হোসেন (৪০) ও জাকারিয়া (৫০) নামে দুই ব্যক্তিকে আটক করে থানা পুলিশের নিকট সোপর্দ করা হয়। এসময় সেনাবাহিনীর সার্জেন্ট মো. মনিরুজ্জামান, নান্দাইল মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন ও থানার এসআই সম্রাটসহ যৌথবাহিনীর টিম উপস্থিত ছিল।
আটককৃতরা হচ্ছে, উপজেলার গাংগাইল ইউনিয়নের অরণ্যপাশা গ্রামের আবু তাহেরের ছেলে বিল্লাল হোসেন এবং মুশুল্লী ইউনিয়নের মুশুল্লী গ্রামের আবু সিদ্দিকের পুত্র জাকারিয়া। জানা গেছে, পরিবেশ দপ্তরের অনুমোদনহীন এস.আর,বি ব্রিকস নামের ইটভাটায় দীর্ঘদিন যাবত ভাটায় কাজ করা শ্রমিকদের উপর অত্যাচার-নির্যাতন চালিয়ে আসছিল। শ্রমিকদেরকে জিম্মি করে ভাটায় কাজ করানো সহ ঠিকমত মজুরির টাকা দেওয়া হতোনা।
এছাড়া শ্রমিকরা তাদের ন্যায্য টাকা চাইলে তাদের সাথে খারাপ আচরণসহ মারধর করা হতো। এমনকি দূরদুরান্ত থেকে আসা ইটভাটার শ্রমিকদেরকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে তাদেরকে জিম্মি করে রাখতো। ফলে ইটভাটার মালিক ও তার সহকারীরা আর্থিক সুবিধা ভোগ করার পাশাপাশি অল্প মজুরিতে ভাটার কাজ করিয়ে নিতো।
এধরনের অনেক অভিযোগের কথা তুলে ধরেন ইটভাটায় কাজ করা শ্রমিকের সরদার মো. মেহেদী হাসান মাসুদ। তিনি আরও জানান, ইটভাটার মালিক বারুইগ্রামের মৃত রফিক মিয়ার ছেলে রুহুল আমিন শ্রমিকদের সাথে খারাপ আচরণ করতেন। এরই প্রেক্ষিতে বিষয়টি গোপনীয়ভাবে গৌরীপুর সেনাবাহিনী ক্যাম্পকে জানালে ইটভাটায় অভিযান চালিয়ে জিম্মি থাকা শ্রমিকদেরকে উদ্ধার করা হয়েছে এবং দুজনকে আটক করা হয়।
এ বিষয়ে ইটভাটার মালিক রুহুল আমিনের বলেন, অভিযোগটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। এখানকার শ্রমিকদের দেয়ার জন্য জনৈক মাসুদ আমার কাছ মোটা অংকে টাকা-পয়সা নিয়ে শ্রমিকদের না দিয়ে পালিয়ে যায়। একপর্যায়ে শ্রমিকদের প্রাপ্ত মজুরি ফিরে দেয়ার আশ্বাস দিয়ে তাদেরকে কাজ চলমান রাখার অনুরোধ জানাই। এই অবস্থায় এমন মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে আমাকে হয়রানি করা হচ্ছে। আমার অন্যান্য শ্রমিকও দূর-দূরান্তের হলেও কারও কোন অভিযোগ নাই। এটা আমাকে সমাজে হেয় প্রতিপন্ন করার জন ওই মাসুদ ষড়যন্ত্র করেছে। যৌথবাহিনী অন্যান্য শ্রমিকদেরকেও কোন জিজ্ঞাসাবাদ করেনি। নান্দাইল মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন অভিযানের বিষয়টি বিডিচ্যানেলফোরকে নিশ্চিত করে বলেন, ইটের ভাটার মালিক মো. রুহুল আমিন ও তার সহকারী মো. বিল্লাল হোসেনের সহায়তায় জিম্মি থাকা শ্রমিকদেরকে মারধর, মজুরির টাকা সঠিকভাবে না দেওয়া ও শ্রমিকদেরকে আটকে রাখার অপরাধে যৌথবাহিনী দুইজনকে আটক করেছে এবং ২০জন শ্রমিকদেরকে উদ্ধার করেছে।
Leave a Reply