ময়মনসিংহের নান্দাইলে মহিলাদের সাথে তারাবীর নামাজ পড়তে গিয়ে দশ বৎসরের এক কন্যা শিশু ধর্ষিত হয়েছে। এ ঘটনায় আরিয়ান আহেমদ শাওন (১৬) নামে দশম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের দায়ে আটক করা হয়েছে। বর্তমানে ধর্ষিতা মেয়েটি ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে
চিকিৎসাধীন আছে এবং শাওন থানা পুলিশ হেফাজতে রয়েছে। এমন ঘটনাটি ঘটেছে নান্দাইল উপজেলার রাজগাতী ইউনিয়নের বড়াইল গ্রামে।
জানা গেছে, উপজেলার বড়াইল গ্রামের জনৈক ব্যক্তির শিশু কন্যা (১০) প্রতিদিনের মতই শুক্রবার (২১ মার্চ) প্রতিবেশী ফারুক মিয়ার বাড়িতে নারীদের সাথে তারাবীর নামাজ পড়তে যায়। এসময় ফারুক মিয়ার পুত্র পুরুড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র কিশোর আরিয়ান আহমেদ শাওন ওই শিশুকে তার মাথা ও পা টিপে দিতে বলে। একপর্যায়ে শাওন ওই শিশুকে বিভিন্ন প্রলোভন ও ভয় দেখিয়ে ধর্ষণ করেছে বলে শিশুর কথানুযায়ী অভিযোগ তুলে ধরেন শিশুর পিতা। এছাড়া তিনি আরও জানান, শুক্রবার রাতে তার শিশু কন্যা বাড়িতে এসে প্রথমে কিছুই বলেনি, তবে প্রস্রাব লাল হচ্ছে বলে শিশুটি তার পরিবারকে জানায়। এতে তারা শিশুটির শরীর স্বাভাবিকভাবে অসুস্থ হয়েছে বলে শনিবার দিন তাকে শরবত ও স্যালাইন পান করায়। পরে রবিবার শিশুটি পাশ্ববর্তী তার নানির বাড়িতে নিয়ে গেলে সেখানেও তার প্রস্রাবে রক্ত যেতে থাকে। বিষয়টি দেখে তার নানী সন্দেহভাজন হিসাবে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে, ফারুক মিয়ার পুত্র আরিয়ান আহমেদ শাওন তার সাথে খারাপ কাজ করেছে বলে জানায় এবং তাকে ধর্ষণ করার সব ঘটনা খুলে বলে। পরে এ বিষয়টি শিশুটির পিতা ও মাতাকে জানালে তারা অভিযুক্ত শাওনের বাড়িতে গিয়ে শাওনের মা-বাবাকে অবহিত করলে তারা তাদেরকে হুমকি দেয়। এমন কোন ঘটনাই ঘটেনি বলে চুপ থাকার কথা বলে।
এদিকে মেয়েটির অবস্থা আরও খারাপ হতে থাকলে রবিবার রাতেই তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে মমেক হাসপাতালের পুলিশ কেস রিপোর্টিং অনুযায়ী ধর্ষণের বিষয়টি জানতে পেয়ে ধর্ষক আরিয়ান আহেমদ শাওনকে সোমবার, ২৪ মার্চ ভোররাতে নিজ বাড়ি থেকে আটক করে থানা হেফাজতে নিয়ে আসে।
তবে অভিযুক্ত ধর্ষকের পরিবার প্রভাবশালী হওয়ায় শিশুটির পরিবারকে চাপ দিয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এ বিষয়ে ভিকটিমের পিতা বলেন, এলাকার লোকজন যে বিচার করবে, আমি তাই মেনে নিবো। এলাকাবাসীর বাইরেতো আমি না। অপরদিকে শাওনের দাদী আনোয়ারা বেগম ও ছোট বোন সালমা আক্তার অভিযোগের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, এ ঘটনায় শাওনকে ফাঁসানো হচ্ছে। মমেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগ থেকে জানা গেছে, শিশুটি সেক্সওয়েল অ্যাসল্টে ভোগছে। বর্তমানে শিশুটি একজন নারী চিকিৎসকের পর্যবেক্ষণে আছে।
নান্দাইল মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে অভিযুক্তকে আটক করা হয়। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
Leave a Reply