কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্যাকমো (সাব এ্যাসিটেন্ট কম্যুনিটি মেডিকেল অফিসার) মো. আলমগীর হোসেনের বিরুদ্ধে সরকারি ভ্যাকসিন বিক্রি করে নগদ অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ২ নভেম্বর শনিবার দিবাগত রাতে উপজেলার পূর্ব ভাগলপুর গ্রামের মো. সায়েদ মিয়ার স্ত্রী মোছা. সেলিনা বেগম (৫২) শেয়ালের কামড়ে গুরুতর আহত হন। পরদিন রবিবার সন্ধ্যায় চিকিৎসা করাতে তার স্বজনরা তাকে কুলিয়ারচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। এসময় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক স্যাকমো আলমগীর হোসেন রোগির পরিবারকে বলেন হাসপাতালে সরকারি ভ্যাকসিন নেই। বাহির থেকে ভ্যাকসিন এনে দিলে তারা ভ্যাকসিন পুশ করে দিবেন। যদি বাইরে থেকে কিনে এনে দিতে না পারে তা হলে তাকে দেড় হাজার টাকা দিলে তিনি নিজে বাইরে থেকে ভ্যাকসিন এনে পুশ করে দিবেন। এসময় স্যাকমো আলমগীর হোসেনের দাবী অনুযায়ী তার হাতে দেড় হাজার টাকা দেওয়ার সাথে সাথে আলমগীর হোসেন মোবাইলে কল করলে একজন যুবক ভ্যাকসিন নিয়ে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আসেন। ওই যুবকের কাছ থেকে ভ্যাকসিন নিয়ে রোগি সেলিনা বেগমের শরীরে পুশ করেন আলমগীর হোসেন। রোগির স্বজনরা খালী ভ্যাকসিনের বোতল সংগ্রহ করে দেখতে পান পুশ করা ভ্যাকসিনের বোতলের গায়ে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার লেখা রয়েছে। যা সরকারি ভ্যাকসিন। স্বজনদের দাবী সরকারি ভ্যাকসিন বিনামূল্যে না দিয়ে টাকার বিনিময়ে দেওয়ার বিধান আছে কি না? এঘটনার বিচার দাবী করেন তারা।
এব্যাপারে উপজেলা স্যাকমো মো. আলমগীর হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সরকারী ভ্যাকসিন সরবরাহ না থাকায় কল করে একজনের মাধ্যমে দেড় হাজার টাকার বিনিময়ে ভ্যাকসিন এনে রোগির শরীরে পুশ করা হয়েছে। তবে টাকা আমি নিজ হাতে গ্রহণ করিনি। হাসপাতালের সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করে দেখলে আসল ঘটনা বের হয়ে আসবে।
মঙ্গলবার, ৫নভেম্বর সকালে একাধিক ভুক্তভোগীসহ অর্ধশত লোক নিয়ে স্যাকমো মো. আলমগীর হোসেনের বিরুদ্ধে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন শেয়ালের কামড়ে আহত রোগির ছেলে মো. নাজিম (২৫)।
অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা স্বীকার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. তমাল কান্তি মল্লিক বলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আদনান আখতার স্যার কিশোরগঞ্জে একটি মিটিং-এ অবস্থান করায় অভিযোগটি আমি গ্রহণ করেছি। স্যারের সাথে পরামর্শ করে এ বিষয়ে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আদনান আখতার অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, অভিযোগটি তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Leave a Reply