এলাকাজুড়ে মাদক ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম। অনেকটা প্রকাশ্যে চলছে ইয়াবা, গাঁজা, মদসহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্য বেচাকেনা। কেউ মুখ খুললে দেওয়া হয় হুমকি, করা হয় মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি। এমন পরিস্থিতিতে মাদক ব্যবসায়ীদের দৌরাত্মে কোণঠাসা হয়ে আছে ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ পৌর শহরের চরনিখলা নদীর পাড়ের এলাকাবাসী।
ভুক্তভোগীরা বলছে, এসব মাদক ব্যবসায়ীরা যুবসমাজকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিচ্ছে। এই এলাকার ছেলেমেয়ের বিয়েশাদি এখন হুমকির মুখে। এতে অভিভাবকরা বেকায়দায় রয়েছেন। এলাকাবাসি সম্মিলিত হয়ে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে অভিযোগ দিয়েও পাচ্ছেনা কোন প্রতিকার।
পুলিশ বলছে, এই মাদক ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন সময় গ্রেফতার করা হলেও জামিনে কারাগার থেকে বেরিয়ে আবার একই কাজ করছে।
জানা যায়, এ এলাকার মৃত সন্তুষ ভাসফোরের ছেলে রাজা রাম ভাসফোর, আব্দুল খালেকের স্ত্রী জরিনা বেগম, রাম প্রসাদ গৌড়ের ছেলে মতিলাল গৌড়, গণেশ গৌড়ের ছেলে শ্যামল গৌড়, মৃত-চুনিলাল ভাসফোরের ছেলে সাজু ভাসফোরসহ আরো বেশ কয়েকজন বহুদিন ধরে মাদক ব্যবসা করে আসছে। এলাকাবাসী মিলে তাদেরকে বহুবার বলা ও বুঝানোর পরেও তারা আইনের চোখ ফাঁকি দিয়ে মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। উল্লেখিত ৫জন মাদক ব্যবসায়ীর নামে থানায় একাধিক মাদক মামলাও রয়েছে। একাধিক মামলা থাকা সত্ত্বেও তারা জনসম্মুখে মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। এলাকার যুব সমাজসহ দূর দুরান্ত থেকে এসে ছাত্র এবং বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মাদকসেবীরা এ এলাকা থেকে মাদক গ্রহণ করে ও কিনে নিয়ে যায়। তাদের কারণে এলাকার যুবসমাজ ও এলাকার ছাত্রছাত্রীরা মাদক সেবন করে ধ্বংসের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। অন্য এলাকার মাদকসেবীরা এই এলাকায় এসে মাদক সেবন করে মহল্লার স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসার মেয়েদের দৈনন্দিন ইভটিজিং করে যাচ্ছে। এ এলাকার মাদক ব্যবসা বন্ধের লক্ষ্যে ২০২৩ সালের ১৮ নভেম্বর স্থানীয় অর্ধশতাধীক ব্যক্তির স্বাক্ষরিত একটি অভিযোগ ঈশ্বরগঞ্জ থানা অফিসার ইনচার্জ বরাবর দাখিল করেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে সাজু গৌড় ও শ্যামল গৌড়কে পুলিশ গ্রেফতার করলেও বাকি আসামিরা বীরদর্পে চালিয়ে যাচ্ছে তাদের মাদক ব্যবসা। পরে স্থানীয় এলাকাবাসী নিজ উদ্যোগে মাদক ব্যবসায়ীদের হুঁশিয়ারি করে মাদকমুক্ত এলাকা ঘোষণা দিয়ে ব্যানার টানিয়েছেন। ফলে বাইরের মাদকসেবীদের আনাগোনা কমে যাওয়ায় মাদক ব্যবসায়ী রাজারাম ভাসফোর অভিযোগকারীদের মধ্য থেকে ৭ জনের নামে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলাটি বর্তমানে পিবিআই ময়মনসিংহ এর তদন্তাধীন রয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা মজনু মিয়া বলেন, ‘মাদক ব্যবসায়ীদের কাছে এ মহল্লার মানুষ এখন জিম্মি। তাদের কারণে মান-সম্মানের ভয়ে অনেকেই নিজ এলাকার পরিচয় দিতেও লজ্জা বোধ করেন। এর আগে বিভিন্ন সময় তাদের অপকর্মের প্রতিবাদ করে তারা নাজেহাল হয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার হুমকি পেয়েছেন। এখনতো আমাদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাদেরকে হয়রানি করছে।
এ বিষয়ে ঈশ্বরগঞ্জ থানার ওসি মাজেদুর রহমান বলেন, ইতোমধ্যে অভিযুক্ত ২ মাদক ব্যবসায়ীকে মাদকসহ গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
Leave a Reply