ময়মনসিংহের ত্রিশালে নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র ছাড়াই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ফসলি জমির মাঝখানে গড়ে তোলা হয়েছে লাইসেন্সবিহীন অবৈধ সোনার বাংলা ইটভাটা। যার কোন লাইসেন্স ও পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নেই। এই ভাটার কারণে আশপাশের বসতি ও স্থানীয় বাসিন্দারা চরম দুভোর্গের শিকার হচ্ছেন। ফসলী জমির টপসয়েল কেটে নিয়ে তা ইট তৈরির কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে । ফলে মার্টির উর্বরতা শক্তি নষ্ট হচ্ছে । প্রতিদিনই শত শত ইটের ও মাটির ট্রাকের কারণে ধূলোবালিতে সাদা হয়ে যায় ওই সড়কে চলাচলকারী গাড়ি। ধূলোবালি ও কালো ধোঁয়ার কারণে কোমলমতি শিশুরা মারাত্মক স্বাস্থ ঝুঁকিতে রয়েছে। হুমকির মুখে পড়েছে ফসলি জমি ও প্রাকৃতিক পরিবেশ।
সরেজমিনে উপজেলার কাকচর গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, কাকচর ফাজিল মাদ্রাসা,দারুল মা’আরিফ আল-ইসলামিয়া মাদ্রাসা কাকচর ও উত্তরপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তিনপাশ ঘেষে মজিবর রহমানের মালিকানাধীন সোনার বাংলা নামক লাইসেন্স বিহীন ইটভাটাটি স্থাপন করা হয়েছে । ভাটার কার্বনডাই অক্সাইড ও ধোঁয়া পাশের ওই সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কয়েক শ কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীসহ আশপাশের বসতি ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এক কিলোমিটারের মধ্যে, আবাসিক ও জনবসতি, সংরক্ষিত এলাকার বনভ‚মি এবং জনগুরুত্বপৃর্ণ এলাকায় ইটভাটা করা যাবেনা এবং সরকারী বনাঞ্চলের সীমারেখার দুই কিলোমিটার দুরত্বে ভাটা স্থাপন করতে হবে-এমন বিধান রয়েছে। বিধান রয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে ছাড়পত্র, জেলা প্রশাসকের অনুমোদন বা লাইসেন্স না নিয়ে ইটভাটা চালু করা যাবেনা। আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার বিধান থাকলেও তাদের রহস্যজনক কারণে পরিবেশ অধিদপ্তর ও স্থানীয় প্রশাসন কোনো প্রকার পদক্ষেপ নিচ্ছে না।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, উপজেলায় প্রায় ৫০টি ইটভাটা রয়েছে। এসব ভাটার বেশীরভাগ লাকড়ি দিয়ে ইট পোড়ানো হয়ে থাকে বলে অভিযোগ রয়েছে। কয়লার দাম বেশি হওয়ায় বেশ কিছু বাংলা ইটভাটায় দিন রাত ২৪ঘন্টা কাঠ দিয়ে ইট পুড়ানো হচ্ছে। অধিকাংশ ইটভাটা মালিক এসব আইনের তোয়াক্কা না করে সংশ্লিষ্টদের ম্যানেজ করে অবৈধভাবে ফসলী জমির টপসয়েল ব্যবহার করে দেদারছে তাদের ইট বানিয়ে যাচ্ছে । ফলে আশপাশ এলাকার আবাদি জমির উবর্রতা হ্রাস ও বিভিন্ন প্রজাতির ফলজ, বনজ গাছপালাসহ প্রাকৃতিক পরিবেশ হুমকির মুখে পড়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, অধিকাংশ ইটভাটায় শিশু ও নারী শ্রমিক দিয়ে কাজ করানো হয়ে থাকে। এমনকি ইট তৈরীতে ৬ থেকে ৭ ধরণের ডাইস ব্যবহার করা হয় এবং ইটের সাইজ ছোট-বড় করে প্রতিনিয়তই ক্রেতাদের সাথে প্রতারণা করা হয়ে থাকে।
কাকচর উত্তরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কোহিনূর আক্তার রুমা জানান,ইটখলার কারণে শিক্ষার্থীদের ও আমাদের অনেক সমস্যা হয়।
ময়মনসিংহ পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক নাজিয়া উদ্দিন জানান,ত্রিশালের অধিকাংশ ইটভাটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কাছে এবং বেশির ভাগ ইটখলার লাইসেন্স নেই। আমরা আগেও অভিযান পরিচালনা করেছি এবং এখনও তা অব্যহত আছে।
Leave a Reply