কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন নিয়মিত অফিস না করায় সেবা গ্রহীতাদের ভোগান্তি বেড়েছে।
রবিবার, ৩ নভেম্বর সকাল ৯ থেকে অফিস টাইম বিকাল ৫ টা পর্যন্ত উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তাকে অফিসে দেখা যায়নি। সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ওই কর্মকর্তার অফিস রুমের দরজা খোলা থাকলেও ওই কর্মকর্তাসহ কেউ ওই রুমে ছিলনা। আবার বিকাল ৪টা ১৭ মিনিটের সময় ওই অফিসে গিয়ে দেখা যায় অফিসের সকল রুম বন্ধ ।
জানা যায়, তিনি উপজেলা অফিসার্স কোয়ার্টারে মাঝে মধ্যে থাকলেও প্রায় সময় নারায়ণগঞ্জ বাসা থেকে তার ইচ্ছেমতো এসে অফিস করে চলে যান। এমনও দেখা যায় প্রায় সময় তিনি অফিসে আসেন না। আসলেও অফিসে থাকেন না। স্টাফদের নিকট জানতে চাইলে তারা বিভিন্ন তালবাহানা দেখিয়ে বলেন স্যার বাহিরে আছেন।
গত ৬ অক্টোবর পৌরসভা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশের মাধ্যমে পৌরসভার প্রশাসকের কর্ম সম্পাদনে সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে ৯টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলরের ক্ষমতা প্রয়োগ ও দায়িত্ব পালনের জন্য উপজেলার ৬টি দপ্তরের কর্মকর্তাদের আনুষ্ঠানিকভাবে পৌরসভার কাউন্সিলর হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়। এর মধ্যে পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ডের নোয়াগাঁও, একরামপুর ও রায়েরচর মহল্লার দায়িত্ব পান উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন। কিন্তু তিনি প্রায় সময় অফিসে অনুপস্থিত থাকায় সেবা গ্রহীতারা সেবা পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন প্রতিনিয়ত। পৌরসভার স্টাফগণ এসেও তাকে অফিসে পাননি।
উপজেলা যুবউন্নয়ন কর্মকর্তা অনুপস্থিত থাকার বিষয়ে প্রথমে অফিসের কোন স্টাফ কোন কিছু বলতে না চাইলেও পরে কয়েকটি প্রশ্নের জবাব দেন তারা।
বিকাল ৪টা ২০মিনিটের সময় উপজেলা পরিষদ তোড়নের সামনে দেখা হলে উপজেলা যুব উন্নয়ন কার্যালয়ের ক্যাশিয়ার মো. আমির হোসেন বলেন, আমি নামাজে গিয়েছিলাম। আমার রুম বন্ধ থাকলেও তালা লাগিয়ে আসিনি।
এব্যাপারে উপজেলা যুব উন্নয়ন কার্যালয়ের অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর আব্দুল মজিদ বলেন, স্যার আজ অফিসে আসেননি, ছুটিতে আছেন। ছুটির জন্য কোথাও কোন আবেদন জমা দিয়ে গেছেন কি না তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রায় সময় ছুটি কাটিয়ে পরদিন অফিসে এসে ছুটির আবেদন করেন তিনি।
এব্যাপারে সহকারী উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা আলতাফ হোসেন মোল্লা বলেন, স্যার আজ অফিসে আসেননি। তিনি ছুটিতে আছেন কি না তাও জানিনা।
রবিবার অনুপস্থিত থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন বলেন, তিনি ঢাকায় আছেন। সন্ধ্যারপর কুলিয়ারচর আসবেন। তার বাড়ি নারায়ণগঞ্জ।
এব্যাপাবে কুলিয়ারচর পৌরসভা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাবিহা ফাতেমাতুজ-জোহরা’র সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা অনুপস্থিত থাকার কথা আমি জানিনা। এ ব্যাপারে কেউ আমাকে অবহিত করেননি। যুব উন্নয়ন কর্মকর্তাও আমাকে অবহিত করে ছুটিতে যাননি।
এব্যাপারে কিশোরগঞ্জ জেলা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপপরিচালক জেড এ শাহাদাত হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, কুলিয়ারচর উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা আমার নিকট ছুটির জন্য কোন আবেদন করেননি এবং তিনি অফিসে না গিয়ে কোথায় আছেন তাও আমাকে অবহিত করেননি। অফিসে অনুপস্থিত থাকার বিষয়টি খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Leave a Reply