* প্রতি কেজিতে লস হচ্ছে ৫০/৬০ টাকা
* আগ্রহ হারাচ্ছে খামারি ও উদ্যোক্তারা
ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার প্রান্তিক পোল্ট্রি খামারিদের ব্যবসায় ধ্বস নেমে এসেছে। পোল্ট্রী কোম্পানির ফিড, ঔষধ ও মুরগির বাচ্চার বাজার দর সিন্ডিকেটের কারণে ব্যবসায় এমন ধ্বস নেমে আসার অভিযোগ করেন প্রান্তিক খামারি। ফলে পোল্ট্রি খামারিরা তাদের ব্যবসা থেকে সরে আসতে বাধ্য হচ্ছে। এমনকি নতুন উদ্যোক্তরাও পোল্ট্রি ব্যবসায় নামতে অনীহা প্রকাশ করছে।
সরেজমিন গিয়ে জানা গেছে, নান্দাইল উপজেলার ১টি পৌরসভা সহ ১৩টি ইউনিয়নে প্রায় ৩ শতাধিক পোল্ট্রি খামার রয়েছে। এসব খামারি ও উদ্যোক্তরা ব্রয়লার ও সোনালী মুরগির পোল্ট্রি ফার্ম রয়েছে। খামারি দেশে আমিষের চাহিদা মেটাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। কিন্তু বর্তমান বাজারে পোল্ট্রী খামারে মুরগির উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় তাদেরকে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এতে করে লাভের মুখ দেখার পরিবর্তে লসের ক্ষতির সম্মুখীনই হচ্ছে বেশি। ফলে অনেক খামারি ফার্ম চালানো বন্ধ করে দিয়ে বিদেশে যাত্রা করছে।
জানা গেছে, বাজারে মুরগির মাংসের দর প্রতি কেজিতে ২/৫ টাকা বাড়লেই পোল্ট্রী কোম্পানির সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা মুরগির বাচ্চার দর প্রতি পিসে ১০ টাকা থেকে ১৫ টাকা এমনকি ২০ টাকা পর্যন্ত বাড়িয়ে দেয়। এছাড়া পশু-পাখির খাদ্য পোল্ট্রী ফিডের দামও প্রতি বস্তায় ২০/৫০ টাকা বাড়ানো হয়। ৫০ কেজির এক বস্তা মুরগির খাদ্যের দাম সর্বনিন্ম ৩ হাজার ৩শ’ টাকা। শুধু তাই নয় এদিকে মুরগির ঔষধের দামও বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে মুরগির বাচ্চা ক্রয়, খাদ্য ও ঔষধ খরচসহ সর্বোপরি উৎপাদন খরচের তালিকায় এক কেজি ১০০ গ্রাম সোনালী মুরগির প্রস্তুত করতে ২ মাসে খরচ পড়ে ২৩০/২৪০ টাকা কেজি। আর বাজারে পাইকারী বিক্রি হয় ১৬০ টাকা থেকে ১৭০ টাকা অথবা ১৮০ টাকা। ফলে প্রতি কেজিতে ৫০টাকা থেকে ৬০ টাকা ক্ষতি হচ্ছে খামারিদের। অপরদিকে ব্রয়লার মুরগির প্রতি কেজিতে ২০/৩০ টাকা ক্ষতি হচ্ছে। তবে কিছুটা লাভের মুখ দেখছে খুচরা ব্যবসায়ীরা। কিন্তু খামারি আছে লসের মুখে।
এ বিষয়ে গাংগাইল ইউনিয়নের প্রান্তিক পোল্ট্রি খামারের মালিক ইফেতেকার মামুন, জিয়াউল হক পারভেজ, মোহাম্মদ লিটন ও আশরাফ মিয়া সহ অনেক খামারি জানান, কোন কারণবশত মুরগির মাংসের দাম প্রতি কেজিতে ২ টাকা বা ৫টা বাড়লেই, মুরগির প্রতি পিস বাচ্চার দাম ১০ টাকা ২০ টাকা বাড়ানো হয়। এতে করে সোনালী মুরগির প্রতি পিস বাচ্চা কিনতে হয় সর্বনিন্ম ৫৫ টাকা থেকে ৬০ টাকা, আর ব্রয়লার মুরগির বাচ্চা কিনতে হয় বর্তমান বাজারে ৩৪ টাকা থেকে ৩৭ টাকা। তার উপর পোল্ট্রি খাদ্যের দামও আকাশচুম্বি। ফলে সিন্ডিকেটের কারণে পোল্ট্রি ব্যবসায় ধ্বস নেমে এসেছে।
এ বিষয়ে সংশিষ্ট কর্তৃপক্ষসহ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করছেন খামারিগণ। এ বিষয়ে নান্দাইল উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা: মো: হারুনর রশীদের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তাকে লাইনে পাওয়া যায়নি। তবে ভেটেরিনারি সার্জন ডা. অমিত দত্ত তিনি বলেন, পোল্ট্রি কোম্পানির সিন্ডিকেটের বিষয়টি তো আমাদের নয়, এটা দেখবে মন্ত্রণালয়। এরপরেও আমরা চেষ্টা করছি, প্রতিবেদন আকারের খামারিদের দাবীগুলো তুলে ধরার।
Leave a Reply