গার্মেন্টস কর্মী ইয়ামিন (৩৫)। নিজ বাড়ি কিশোরগঞ্জের মিঠামইন উপজেলার কাঞ্চনপুর গ্রামের চৌধুরী বাড়ি। শুক্রবার বিকালে পুলিশের গুলিতে নিহত ইয়ামিনের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির সামনে নিহত ইয়ামিনের মা মাটিতে লুটিয়ে পড়ে বিলাপ করে বলছেন, আমার পোলা ইয়ামিন (১৯)কে লুইয়া প্রত্যেক দিন সকালে গার্মেন্টসে যাইতাম আহন কারে লইয়া যাইমু। ছাএ আন্দোলনের ২য় দিন শুক্রবার ইয়ামিন গার্মেন্টস থেকে হাফ বেলা ডিউটি করে বাড়ি ফেরার পথে রাস্তায় পুলিশের ছোঁড়া গুলিতে গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
গার্মেন্টস কর্মী ইয়ামিনের মা ইয়াসমিন বলেন,তার ২ ছেলে ইয়ামিন ও ইয়াসিন দুজনেই ঢাকার উওর বাড্ডায় এফ,এন,এফ ফ্যাশানে চাকরি করত।ঘটনার দিন শুক্রবার অর্ধেক বেলা কাজ করে বাসায় ফিরছিল। রাস্তায় গোলাগুলি হচ্ছে তিনি তা’ জানতেন না। প্রতিদিনের মত নিহত ইয়ামিন গার্মেন্টস থেকে দুপুরে নুরেরছালা নতুন বাজারের নিজ বাসায় ফিরছিলেন। রাস্তায় আসা মাত্রই গুলিবিদ্ধ হয়ে তিনি রাস্তায় লুটিয়ে পড়েন।
পরে পথচারীরা আহত ইয়ামিনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। দুদিন নিখোঁজ থাকার পর ৩য় দিন তার পকেট থেকে গার্মেন্টস এর আইডি কার্ড পেয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ফোনে তার পরিবারকে জানান। তারা তখন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছুটে যান।
সেখানে সাতদিন চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় শুক্রবারে মারা যান ইয়ামিন। নিহত ইয়ামিন চৌধুরীর মা আরও জানান, আমার ছেলে কোনো অপরাধ নাই।আমার ছেলেকে যে গুলি করেছে আল্লাহ তার বিচার করবেন। অভাবের তাড়নায় ইয়ামিনের মা ইয়াসমিন গার্মেন্টসে কাজ নেন। ছেলেরা তখন ছোট ছিল। তার স্বামী রতন মিয়া কোনো রকম কাজকর্ম করে সংসার চালাতেন। মাঝখানে তিনি ৩/৪ বছর জর্দানে চাকুরি করেছেন। দেশে এসে পুনরায় ছেলে সন্তানদের নিয়ে তিনি গার্মেন্টসে যোগ দেন। ছেলেকে তার মা হারিয়ে ইয়াসমিন বর্তমানে পাগল প্রায়। শুধু ফ্যাল ফ্যাল করে ছেলের ছবি বুকে নিয়ে চেয়ে থাকছেন। তিনি অনবরত বিলাপ করছেন। তিনি তার ছেলে হত্যার বিচার চান আল্লাহ’র। সরকারের কোনো লোক এখন পর্যন্ত সাহায্য তো দূরের কথা কোনো খোঁজ খুবরই নেয়নি। আমি আমার বুকের ধনের খুনের বিচার চাই।
Leave a Reply