‘‘হুজুর আমারে আর মারবেন না, আমি অসুস্থ’’

0
160
মুহাম্মদ কাইসার হামিদ, কুলিয়ারচর (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি।।
‘শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড’সন্তানদের সু-শিক্ষায় শিক্ষিত করার লক্ষ্যে পিতা-মাতা সন্তানদের স্কুল কলেজ ও মাদ্রাসায় পাঠিয়ে থাকেন। এদেশে আমাদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়, শিক্ষক নামে কিছু জানোয়ার কতকিছুই না করতে পারে। সরকারের নির্দেশ তোয়াক্কা না করে মানবাধিকার, ন্যায়নীতি বোধ সবকিছু জলাঞ্জলি দিয়ে শুধুমাত্র নিজের স্বার্থে ও নিজেকে বড় শিক্ষক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে বেচে নেয় নিষ্ঠুরতার পথ। এমনই এক নিষ্ঠুর ঘটনা ঘটেছে কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে।
মানবাধিকার লঙ্গন করে কোন প্রকার আইন কানুনের ধারেকাছে না গিয়ে শক্তির দাপট দেখিয়ে জাহিদ হাসান (৮) নামে মাদ্রাসার এক অসুস্থ ছাত্রকে নির্দয় ও নির্মমভাবে  বেত্রাঘাত করার ফলে আরো অসুস্থ হয়ে পরে সে। এ ঘটনা ধামাচাপা দিতে মাদ্রাসার পরিচালনা কমিটি ও স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল উঠে পড়ে লেগেছে। ঘটনাটি ঘটেছে গত সোমবার (২৬ এপ্রিল) দুপুরের দিকে উপজেলার রামদী ইউনিয়নের খালখাড়া কোনাপাড়া গ্রামে আত তালিমুন নববী সা. দারুল উলুম মাদ্রাসায়। 
উপজেলার খালখাড়া কোনাপাড়া গ্রামের ওমান প্রবাসী মো. লিটন মিয়ার ছেলে স্থানীয় ‘‘আত তালিমুন নববী সা. দারুল উলুম মাদ্রাসা’র  ছাত্র জাহিদ হাসান (৮) এ প্রতিনিধির কাছে বলে, মাদ্রাসায় যেতে একটু দেরি হওয়ায় তাদের মাদ্রাসার নূরানী বিভাগের শিক্ষক ক্বারী মো.খাইরুল ইসলাম তাকে নির্দয় ও নিষ্ঠুর ভাবে বেত দিয়ে একাধিক আঘাত করে। যার ফলে সে ভীষণ অসুস্থ হয়ে পরে। সে আরো বলে, তার দাঁতে প্রচণ্ড ব্যাথা হওয়ায় সে ওই দিন সকালে দাঁত দেখাতে ডাক্তারের নিকট যায়। পরে তার দাঁত উঠানোর পরে সে অসুস্থ শরীর নিয়ে মাদ্রাসায় যেতে কিছুটা দেরি হয়। তার হুজুরকে বার বার বলেছিলো, হুজুর আমি অসুস্থ, দাঁতের ব্যাথার করার কারণে ডাক্তারের কাছে গেছিলাম। আমাকে আর মারবেন না হুজুর, আমাকে আর মারবেন না। হুজুর আমার কথা না শুনে আমাকে অনেক মেরেছে। আমার বাবা বিদেশে। মা অসুস্থ।
এ ঘটনার পর থেকে মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও জনতা ফুড প্রোডাক্টস এর সত্বাধিকারী আলহাজ্ব মো. জসিম উদ্দিন ভূইয়া স্থানীয় প্রভাবশালী একটি মহল ও মাদ্রাসার শিক্ষকদের নিয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য গত ২৭ এপ্রিল মঙ্গলবার দুপুরে মাদ্রাসার অদূরে একটি নাটকীয় মিটিং করে অভিযুক্ত শিক্ষককে কৌশলে মাদ্রাসা থেকে বের করে দেয়। জানা যায়, ওই শিক্ষক এর আগেও একাধিক শিশু ছাত্রকে বেধম মারধোর করার পরও মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ তাকে চাকুরীতে বহাল রাখেন। মাদ্রাসায় গিয়ে একাধিক ছাত্রের সাথে কথা হলে, তারা বলে, এই মাদ্রাসার শিক্ষকগণ তাদের প্রায়ই বেত দিয়ে মারধোর করেন। এছাড়ার উক্ত মাদ্রাসার শিক্ষকদের বিরুদ্ধে অনেক ধরনের অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে।
এব্যাপারে মাদ্রাসার পরিচালক মাওলানা মোস্তাকিম বিল্লাহ বলেন, এ মাদ্রাসায় তেমন কিছুই হয়নি।
এব্যাপারে মাদ্রাসার পরিচালনা কমিটির সভাপতি আলহাজ্ব মো. জসিম উদ্দিন বলে, এটা তেমন কোন ঘটনা না। তার পরেও অভিযুক্ত শিক্ষককে মাদ্রাসা থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। তবে রেজুলেশন করে বের করা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখনো রেজুলেশন করা হয়নি তবে পরে রেজুলেশন করা হবে।  এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোন প্রকার ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

পোষ্ট এর সময় 2 years by Ahmad Farid

নিচে কমেন্ট করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে