‘সারাবছর পড়ছি মানবিক শাখায়, এখন বিজ্ঞানের পরীক্ষা কেমনে দিমু ’

মো. শহিদুল ইসলাম পিয়ারুল নান্দাইল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি

0
64

ময়নসিংহের নান্দাইলে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের ভুলে জয়নাল মিয়া নামে মানবিক শাখার এক ছাত্রকে দাখিল পরীক্ষায় বিজ্ঞান শাখার পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হচ্ছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের এমন অবহেলা ও দায়িত্বহীনতার কারণে ছাত্রের সারা বছরের পরিশ্রম বৃথায় যাচ্ছে বলে  সমাজের সচেতন ব্যক্তিবর্গের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।

জানা গেছে, মাদ্রাসাছাত্র জয়নাল মিয়া ২০২৩ সালের দাখিল পরীক্ষার্থী। তিনি নান্দাইল উপজেলার চন্ডিপাশা ইউনিয়নের ঘোষপালা গ্রামের দিনমজুর সিরাজ মিয়ার ছেলে। তিনি ঘোষপালা ফাজিল মাদ্রাসার মানবিক শাখার একজন নিয়মিত ছাত্র।

গত ২০২১-২০২২ইং সেশনে মানবিক শাখার ছাত্র হিসাবে নবম শ্রেণিতে ভর্তি হন এবং মানবিক শাখায় নিয়মিত শ্রেণী পাঠদান গ্রহণ করেন। কিন্তু আগামী ৩০ এপ্রিল অনুষ্ঠিতব্য দাখিল পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) প্রবেশপত্র ও রেজিস্ট্রেশন কার্ড হাতে পান তিনি। তার রোল নম্বর (৪০৩৩৭২) এবং রেজি: নম্বর (২০১৮৯৪৫৫২৮)।

রেজিস্ট্রেশন কার্ডে তিনি বিজ্ঞান শাখার সকল বিষয়ের পরীক্ষার্থী হিসেবে নিজেকে দেখতে পেয়ে বিস্মিত হন। তিনি গত দুই বছর যাবত মানবিক শাখায় পড়াশোনা করে আসছেন, অথচ কর্তৃপক্ষের ভুলে এখন তাকে বিজ্ঞান শাখার সকল বিষয়ে পরীক্ষা দিতে হবে জেনে তার মাথায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়েছে!

বর্তমানে ওই ছাত্রের বাবা দিনমজুর সিরাজ মিয়া বলেন, আমি দরিদ্র মানুষ দিন আনি, দিন খাই। পরীক্ষার ফরম ফিলাপের টাকাটাও অন্য একজন দিয়েছে। পরীক্ষার দুইদিন বাকী। শুনতেছি ছেলেটা সারা বছর পড়ছে একটা বিভাগে আর এখন অন্য বিভাগে পরীক্ষা দিতে হবে। এতে আমার ছেলের জীবনটার কি হবে ? আমি মাননীয় শিক্ষামন্ত্রীসহ সকলের সহযোগিতা চাই, আমার ছেলে যে বিষয়ে পড়ছে, সে বিষয়েই যেন পরীক্ষাটা দিতে পারে।

এ বিষয়ে মাদ্রাসা ছাত্র জয়নাল মিয়া বলেন, বৃহস্পতিবার স্যার আমার হাতে এডমিট ও রেজি: কার্ড দেওয়ার আগে আমার স্বাক্ষর নেন। তারপর কার্ড হাতে নিয়ে জানতে পারি আমাকে বিজ্ঞান শাখা পরীক্ষা দিতে হবে। অথচ স্যার জানেন আমি মানবিক শাখার ছাত্র এবং আমি স্যারকে বলছিও। নিয়মিত ক্লাসও করেছি। এখন বিজ্ঞান বিষয়ে পরীক্ষা দেওয়া কি সম্ভব ?

ঘোষপালা ফাযিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আবুল হাসনাত মোহাম্মদ এনামুল হক বলেন, একজন ছাত্রের গ্রুপ পরির্বতনের বিষয়ে আমার জানার কথা না। আর মাত্র দুইদিন আছে, এখন আমি কিভাবে কি করবো ? তবু চেষ্টা করে দেখি কিছু করা যায় কি না ।

নান্দাইল উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোফাখখারুল ইসলাম বলেন, এ দায়ভার মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষকেই নিতে হবে।  আমি সুপারের সঙ্গে কথা বলে দেখি, কোন সমাধান করা যায় কি না।  ভুলের কারণে এভাবে একটা ছাত্রের জীবন নষ্ট হতে পারে না।

পোষ্ট এর সময় 1 month by Ahmad Farid

নিচে কমেন্ট করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে