কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে চার বছরের সন্তানকে মারধর করায় স্ত্রী স্বপ্না আক্তার (২৫) কে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে স্বামী কাউসার মিয়াকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার, ২৮ এপ্রিল সন্ধ্যায় নিহত স্বপ্না আক্তারের বাবা মরম আলী বাদী হয়ে কুলিয়ারচর থানায় কাউসার মিয়াকে প্রধান আসামি করে তিনজনের নামে একটি হত্যা মামলা (নং- ০৯) দায়ের করার পর কাউসার মিয়াকে গ্রেফতার করে পুলিশ। মামলার অন্য আসামিগণ হলেন, কাউসার মিয়ার ছোট ভাই ইউছুফ মিয়া (২৪) ও ইউছুফ মিয়ার স্ত্রী রুপা বেগম (২০)।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, নিহত স্বপ্না আক্তার (২৫) গত সাত বছর আগে কুলিয়ারচর উপজেলার সালুয়া ইউনিয়নের চরকামালপুর গ্রামের মৃত জিল্লু মিয়ার ছেলে কাউসার মিয়া (৩০) এর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। বিবাহের পর থেকে তাদের সংসার জীবন ভালোই চলছিলো। এর মধ্যে গত ২৬ এপ্রিল তাদের একমাত্র সন্তান আরাবী (৪) তার আপন ছোট চাচা ইউছুফ মিয়ার ঘরে ঢুকে তাদের ব্যবহারের টুথপেস্ট নষ্ট করে ফেলে। এ নিয়ে ইউছুফ মিয়ার স্ত্রী রুপা বেগম আরাবী এর মা স্বপ্না আক্তারকে গালিগালাজ করেন। এতে রাগে স্বপ্না আক্তার ছেলে আরাবীকে মারধর করেন। এসময় স্বামী কাউসার মিয়া ছেলেকে মারতে দেখে স্ত্রীকে শাসন করেন। এক পর্যায়ে স্ত্রীকে এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি ও লাথি মারেন কাউসার। আর এতেই স্বপ্না আক্তার মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।
পরে স্বপ্না আক্তারকে স্বামী কাউসার মিয়া নিজেই কুলিয়ারচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ভাগলপুর জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। পরে সেখানকার চিকিৎসক আরও উন্নত চিকিৎসার জন্য রোগিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন।
সর্বশেষ ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় গত ২৮ এপ্রিল সকালে স্বপ্না আক্তারের মৃত্যু হয়। নিহতের পরিবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে জানান, পেটে আঘাতে ফলে স্বপ্না আক্তারের পেটে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়ে তার মৃত্যু হয়েছে।
স্বামী কাউসার মিয়া বলেন, গত তিন মাস আগে স্বপ্না আক্তারের এবোরশন করা হয়েছিলো। সেদিন ছেলেকে মারধরের পর অনাকাঙ্ক্ষিত ভাবেই ঘটনাটি ঘটে যায়।
কুলিয়ারচর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা বলেন, অভিযোগের পর রাতেই ময়মনসিংহের কোতোয়ালী থানার চরপাড়া এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে প্রধান আসামি কাউসার মিয়াকে গ্রেফতার করা হয়। পরে পুলিশ প্রহরায় শনিবার ২৯ এপ্রিল দুপুরে গ্রেফতার আসামিকে কিশোরগঞ্জ বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়।
পোষ্ট এর সময় 4 weeks by Ahmad Farid
