কিশোরগঞ্জে দশ বছর বয়সী মেয়েকে বিষ খাইয়ে ও গলায় তার পেচিয়ে হত্যার দায়ে মা আছমা আক্তার(৩৬)কে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করেছেন আদালত।
রবিবার, ৩০ এপ্রিল দুপুরে কিশোরগঞ্জের নারী ও শিমু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক মুহাম্মদ হাবিবুল্লাহ একমাত্র আসামির উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন।
মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত আছমা আক্তার কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার লতিবাবাদ ইউনিয়নের পূর্ব চরপাড়া গ্রামের মো. সুরুজ মিয়ার মেয়ে।
১০ বছর বয়সের মেয়েকে হত্যার দায়ে মাকে মৃত্যদণ্ড দিয়েছেন কিশোরগঞ্জের আদালত। এছাড়াও তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, আছমা আক্তার রাজধানী ঢাকায় থাকাকালীন ২০০৮ নিজ পছন্দে নাটোর জেলার আশরাফ উদ্দিন নামের একজনকে বিয়ে করেন। দুই বছর পর তাদের সংসারে একটি মেয়ে শিশুর জন্ম হয়। ২০১৩ সালে মহাখালিতে সংঘটিত এক সড়ক দুর্ঘটনায় আছমার স্বামী আশরাফ উদ্দিন মারা যান। এরপর মেয়েকে নিয়ে আছমা বাবার বাড়ি কিশোরগঞ্জে চলে আসেন।
বাবার বাড়িতে থাকাবস্থায়ই ২০১৭ সালে আছমা আবার নিজ পছন্দেই গাজীপুরের জয়দেবপুর এলাকার আবদুল কাদের নামের এক ব্যক্তিকে বিয়ে করেন। কিছুদিন আবদুল কাদের শ্বশুরবাড়ী কিশোরগঞ্জে আসা যাওয়া করলেও এক পর্যায়ে স্ত্রীর কাছে আসা বন্ধ করে দেন। পরে আছমা নিজ মেয়েকে নিয়ে স্বামীর কাছে যাওয়া আসা করতে থাকেন।
একবার স্বামীর বাড়ি জয়দেবপুর থেকে কিশোরগঞ্জে বাবার বাড়ি ফিরে বাড়ির লোকজনের সাথে কথা বলা বন্ধ করে দেন আছমা। ২০২০ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ভাইয়ের শ্বাশুরি কিশোরগঞ্জ এলে তাকে বাড়িতে ঢুকতে বাধা দেন আছমা। এনিয়ে বাকবিতণ্ডা হলে পরদিন ১৬ ফেব্রুয়ারি সকালে নিজ মেয়ে স্কুল থেকে ডেকে এনে তাকে জোর করে ইঁদুর মারার বিষ খাওয়ান মা আছমা। আছমার মা বিষয়টি দেখে নাতনীকে বাঁচাতে এলে আছমা মাকে ধাক্কা দিয়ে তাকে সরিয়ে এয়ার ফোনের তার পেচিয়ে দ্রুত শ্বাসরোধ করে মেয়েকে হত্যা করেন। পরদিন আছমার বাবা আছমাকে একমাত্র আসামি করে কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
২০২০ সালের ৩১ আগস্ট তদন্ত শেষে আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক মিজানুর রহমান।
সাক্ষ্যপ্রমাণ সাপেক্ষে বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে নিজ মেয়ে হত্যার বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে আদালত আছমা আক্তারকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করেন।
পোষ্ট এর সময় 4 weeks by Ahmad Farid
